মহাসড়ক ও ফুটপাত দখলের নামে চলছে কোটি টাকার বাণিজ্য

Passenger Voice    |    ০৪:৫৮ পিএম, ২০২২-০৩-২৩


মহাসড়ক ও ফুটপাত দখলের নামে চলছে কোটি টাকার বাণিজ্য

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর মোড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সংযোগস্থল এলাকায় যানজট নিরসনে তৈরি করা হয়েছে উড়াল সেতু। চারলেন ও উড়াল সড়ক থাকার পরও এই এলাকায় অবৈধভাবে দোকান নির্মান, ফুটপাতে হকার ও মহাসড়ক দখল করে ডাম্পিং ষ্টেশন তৈরি করার জনদুর্ভোগ কমেনি, বরং বেড়েছে সাধারণ মানুষ ও পথচারীদের দুর্ভোগ। আর এর নাম করেই চলছে কোটি টাকার বাণিজ্য।

মহাসড়ক ও ফুটপাত দখল করে কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে স্থানীয় প্রভাবশালী, রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে।

উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নের কাঁচপুর মোড়ের সোনারগাঁ ফিলিং ষ্টেশন এলাকা, কাঁচপুর হাইওয়ে থানা সংলগ্ন মসজিদের সামনের এলাকা, হাইওয়ে পুলিশের ডাম্পিং এরিয়া, লাভলী সিনেমা হল থেকে কাঁচপুর মোড়, মোবাইল পট্টি, কলাপট্টি, কাঁচপুর ডাইং এলাকার মহাসড়ক ও সড়কের ফুটপাত, সরকারি জমি দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালী, জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদরা বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে এবং সিএনজি, লেগুনা, ট্যাক্সি ষ্টেশন ও দূরপাল্লার যাত্রীদের টিকেট কাউন্টার তৈরি করে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করছে। এছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দখল করে দুঘর্টনা কবলিত, লাইসেন্সবিহীন বাস ট্রাক ও অবৈধ সিএনজি, লেগুনা ড্যাম্পিং করা হয়েছে এবং হাইওয়ে পুলিশের নির্ধারিত ডাম্পিং এলাকায় আধাপাকা, টংদোকান ও ফুটপাত দখল করে হকাররা বিভিন্ন পসরা নিয়ে বসেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনই বিভিন্ন অভিযোগ ও দুর্ঘটনায় কবলিত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের জব্দকৃত যানবাহনগুলো কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে মহাসড়কের এক লেন দখল করে রাখা হয়। এসব জব্দ করা যানবাহনগুলোর মধ্যে কিছু যানবাহন মহাসড়কের উপরেই পড়ে থাকে বছরের পর বছর। দীর্ঘসময় পড়ে থেকে এসব গাড়ি যেমন সড়কে চলাচলের সক্ষমতা হারাচ্ছে তেমনি যানচলাচলের প্রতিবন্ধকতাসহ নানা ধরনের সমস্যার তৈরি করছে। যানজট নিরসনে উড়াল সেতু তৈরি করলেও মহাসড়কে ডাম্পিং ও ফুটপাত দখলের কারণে কোন সুফল পাচ্ছেন না বলে জানান স্থানীয়রা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতিদিনই চাঁদা আদায় করছে স্থানীয় রাঘববোয়ালরা। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা বলেন, শুধুমাত্র দখলদারিত্বের জন্য কিছুদিন পরপর এখানে সংঘর্ষ লেগে থাকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আবুল খায়ের মার্কেটের এক ব্যবসায়ী বলেন, আমি দুই সাটারের এ দোকানটি ৯লাখ টাকা অগ্রিম এবং প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা ভাড়া দিই। তবে এখানে বেচাবিক্রি ভাল তাই এ মার্কেটের দোকানের চাহিদা বেশি। ফুটপাতের এক চা দোকানদার বলেন, আমি ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে জায়গাটুকু নিয়েছি এবং প্রতিদিন বিকেল ১৪০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। তিনি আরো বলেন, ফুটপাতে শুধু জায়গা ভাড়া দেওয়া হয়। দোকান নিজেদের করে নিতে হয়।  

দখলদারিত্বের ব্যাপারে জানতে শ্রমিক লীগ নেতা ফারুক ওমরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে কথা বলতে রাজি হননি।  

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমর দখলের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি ও আমার পরিবার দখল ও চাঁদাবাজির সাথে জড়িত নই।

এ ব্যাপারে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ওসি সাজ্জাদ করিম খান বলেন, ডাম্পিংয়ের জন্য যে জায়গা আছে তা চাহিদার চেয়ে অনেক ছোট। বড় গাড়ি রেকার দিয়ে ওখানে নেওয়া সম্ভব হয় না। তাছাড়া একই গাড়ি বেশিদিন আটকেও থাকে না। দখলের ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে আমরা অসহায়।